ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ২০২৪

আপনার ভোটার আইডি কার্ডে যদি ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে তবে ভোটার মাইগ্রেশন আবেদন করে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানার পরিবর্তন করতে পারেন।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ২০২৪

সাধারণত যেসব কারণে আপনার ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে|

  1. বাসা পরিবর্তন করলে

  2. বিবাহের কারণে নিজের ঠিকানা পরিবর্তন

  3. এছাড়াও আর ও বিভিন্ন কারণে আপনার ঠিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে


আগে থেকে জেনে থাকা ভালো ভোটার আইডি কার্ডে আপনি শুধুমাত্র বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন বা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন। অর্থাৎ বর্তমানে আপনি যেই এলাকার ভোটার হিসেবে রয়েছেন আপনি চাইলেই তা পরিবর্তন করে অন্য এলাকার ভোটার হতে পারবেন। আর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ভোটার মাইগ্রেশন।


এছাড়াও আপনার যদি বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি আপনার বাসার নম্বর এবং পোস্ট অফিস পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে আপনি সম্পূর্ণভাবে আপনার জেলা বা উপজেলা পরিবর্তন করতে পারবেন না।


এখন আপনি যদি আপনার বর্তমান ঠিকানা বা ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের ফরম (ভোটার মাইগ্রেশন ফরম-১৩) এ চাওয়া তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে।


ভোটার আইডি কার্ডের বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম :-

আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এবং এরপর সেখান থেকে ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩ নিতে হবে। এবং সঠিক তথ্য সহকারে তা প্রমাণ করতে হবে। এবং এই কাজের জন্য ভোটারকে  স্বশরীরে সেখানে উপস্থিত হতে হবে।


ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের ফরম :

আপনি যখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইবেন সেক্ষেত্রে আপনি যখন আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাবেন তখন আপনাকে এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩ দেওয়া হবে। সেটিকে যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। এবং এটি পূরণ করার ক্ষেত্রে ভোটারকেই সরাসরি উপস্থিত হতে হবে। 


এছাড়া আপনি যদি অনলাইন এর মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানাটি পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্র আপনার হাউজ নং অথবা পোস্ট অফিস পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারেন।



বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র:-

1.আবেদনকারীর NID ফটোকপি;

2.যে এলাকায় স্থানান্তর হবেন উক্ত এলাকার নাগরিকত্ব সনদ;

3.সে এলাকার বিদ্যুৎ/পানি বিল/ট্যাক্স রশিদ/জমির খতিয়ান তথা ইউটিলিটি বিলের কপি।

4.ফরম-১৩ এর ২য় পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির (মেম্বার/কাউন্সিলর) NID নাম্বার সহ নাম, স্বাক্ষর ও সিল।

5.সংস্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের চাহিদামত অন্যান্য সকল কাগজপত্র।


ভোটার স্থানান্তর করা হলেও পরবর্তীতে কিন্তু পুনরায় কোন ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা হয় না । তবে আপনি চাইলে পুনরায় ভোটার আইডি কার্ডটি নিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে বিকাশ অথবা রকেটের মাধ্যমে 230 টাকা এনআইডি ফি জমা দিয়ে  রিইসু আবেদন করে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।


অনলাইনে ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করার জন্য আপনার ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হবে :

  • ভোটার আইডি কার্ডের একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন; 

  • অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ বা ইউটিলিটি বিলের কপি বা জাতীয়তার সার্টিফিকেট অনুযায়ী আপনার ঠিকানাটি পরিবর্তন করুন। ;

  • নির্ধারিত জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি প্রদান করুন। ;

  • প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র বা ডকুমেন্টস আপলোড করুন এবং আপনার আবেদনটি জমা দিন ।


অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম নিম্নরূপ:-

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আপনার দেওয়া তথ্যগুলো জাতীয় পরিচয় পত্রের বাসার নাম্বার ,পোস্ট কোড অথবা অফিসের পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনার বাসার নম্বর, পোস্ট কোড এবং পোস্ট অফিস পরিবর্তন করতে নিম্নের ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে -



ধাপ ১ : জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইট নিবন্ধন করতে হবে:-

আপনি যদি অনলাইনে মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানাটি পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে ভোটার আইডি কার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট “NID Wing” এ অ্যাকাউন্ট log in /registration করতে হবে। এই অ্যাকাউন্টটি লগইন করার জন্য আপনার প্রয়োজন পড়বে-ভোটার আইডি কার্ড নম্বর ,জন্মতারিখ, বর্তমান ঠিকানা ও তাই ঠিকানা উপজেলার প্রয়োজন পড়বে।


 আর এই তথ্যগুলো অবশ্যই আপনার জানা থাকতে হবে। এবং অ্যাকাউন্টটি লগইন করার সময় এ তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। এরপরে আপনার ফেস ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে সেলফির মাধ্যমে আপনার চেহারাটি সত্যতার প্রমাণ দিতে হবে।


ধাপ ২: জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে:-

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ড এর নাম্বার দিয়ে “NID Wing”ওয়েব সাইটে লগইন করতে হবে। এরপর ঠিকানা অপশন এ ক্লিক করতে হবে। এরপর এডিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। এখন আপনি যদি বর্তমান ঠিকানার ভোটার হিসেবেই থাকতে চান সে ক্ষেত্রে লাল এর চিহ্নের বর্তমান ঠিকানার ওপরে ক্লিক করতে হবে। আর আপনি যদি স্থায়ী ঠিকানার ভোটার হতে চান সেক্ষেত্রের নিচের দিকে কোথায় ঠিকানার পাশে টিক দিতে হবে। 


এরপর আসলেও আসল কাজ এখন আপনাকে আপনার বাসার নম্বর, পোস্ট কোড এবং পোস্ট অফিসের নাম্বার খুবই সচেতনতার সাথে সঠিকভাবে লিখতে হবে। পুনরায় তথ্যগুলো ভালোভাবে চেক করে নিতে হবে। এরপর next বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার তথ্যগুলো আরো একবার চেক করার সুযোগ পাবেন তাই সঠিকভাবে তথ্যগুলো আবারো চেক করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।


ধাপ ৩ : ভোটার আইডি কার্ডের কী পরিশোধ করতে হবে :

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য আপনাকে একটি নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য এই ফিটি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে ২৩০ টাকা। এই ফিটি আপনি বিকাশ, রকেট অথবা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারেন। তাই আপনার স্বাচ্ছন্দ অনুযায়ী আপনি যেকোনো একটি মাধ্যম কে বেছে নিয়ে আপনার সংশোধনের ফিটি প্রদান করতে পারেন। এইভাবে আপনার সংশোধনের ফিটি পরিশোধ করতে হবে। আপনার ফিটি পরিশোধ হওয়ার পর অবশ্যই আপনাকে সেই স্লিপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।


ধাপ ৪ : প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে আবেদনটি জমা দিতে হবে:

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য এটি সর্বশেষ ধাপ। ইতিমধ্যে আপনার পূর্বের ঠিকানাটি মুছে গেছে। এখন সময় হল আপনার নতুন ঠিকানাটি উপস্থাপন করার। তাই সব দিক বিবেচনা করে সঠিকভাবে আপনার ঠিকানাটি উপস্থাপন করতে হবে। এখন নতুন ঠিকানাটি প্রমাণের জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার কাগজ পত্র বা ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে।


 এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো আপলোড করারও কিছু নিয়ম রয়েছে নিয়ম নেতা দেয়া হলো:


  • ডকুমেন্টের ক্যাটাগরি বা ধরণ সিলেক্ট করতে হবে;

  • স্ক্যান করা ডকুমেন্টগুলো গুলো আপলোড করতে হবে;

  • আবেদন জমা দিতে “সাবমিট”বাটনে ক্লিক করতে হবে।


আমরা আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনের কারণে অনেক সময় জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করার সময় নিজস্ব এলাকার ঠিকানা না দিয়ে অন্য এলাকার ভোটার নিবন্ধন করে থাকি। তবে আপনার যদি কখনো নিজ এলাকার ভোটার হওয়ার প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে আপনি খুবই সহজে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে ঠিকানাটি পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। তাই এইখানে আপনার দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।


 তবে অবশ্যই ঠিকানা পরিবর্তনের পর আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন না। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে রি ইস্যু আবেদন করতে হবে। এরপর আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড টি ডাউনলোড করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রবাসী বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url