কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৪

কানাডা এই দেশটি বর্তমানে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় কি দেশ। শুধুমাত্র পড়াশোনার জন্যই নয় এর সাথে উন্নত জীবনযাপন এবং চাকরির জন্য কানাডা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি জনপ্রিয় দেশ। শুধু বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই নয় বরং পুরো পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে কানাডা।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৪

এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে এই দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর পড়াশোনার মান পুরো বিশ্বের কাছে অধিক পরিমাণে গ্রহণযোগ্যতা পায়। পুরো বিশ্বের প্রথম শারীর দেশগুলোর ডিগ্রির সাথে এই দেশের ডিগ্রি তুলনা করা হয়। এই দেশটিতে পড়াশোনার মান এত ভাল হওয়ার শর্তেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই দেশে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি এবং থাকার খরচ তুলনামূলক কম।

কানাডায় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। আবার আপনি এই দেশটিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজেরও সুযোগ পাবেন। আপনার পড়াশোনা শেষে স্বল্প সময়ের মধ্যে অভিবাসী হবারও সুযোগ পাবেন। এছাড়াও কানাডায় আরো বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। এ সকল কারণে কানাডাকে বলা হয় উচ্চ শিক্ষার সর্ব রাজ্য।


কানাডা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আপনি যখন একটি দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিবেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সেই দেশটির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। সে দেশটি সম্পর্কে আপনার সংক্ষিপ্ত ধারণা রাখা খুবই জরুরী। চলুন দেশটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে জানা যাক-


কানাডা দেশটি মূলত নর্থ আমেরিকার একটি দেশ। শীত প্রধান দেশগুলোর মধ্যে কানাডা একটি। কানাডাকে বলা হয় পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এর কারণ হচ্ছে এই দেশটির আয়তন ৯.৯৮ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। বিশাল আয়তনের দেশটিতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩,৭৯,৬১,০২০ জন। এ দেশটির স্বীকৃত ভাষা চেঞ্জ ও ফ্রেন্ড ও ইংরেজি। এবং এই দেশের মুদ্রা কে কানাডিয়ান মুদ্রা বলা হয়। কানাডার রাজধানীর নাম অটোয়া। এই দেশের সর্ববৃহৎ শহর হচ্ছে টরেন্টো।

স্টাডি পারমিট এর জন্য আবেদন

আপনি যদি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিষের যে কোন দেশে যেতে চান সে ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম আপনার স্টুডেন্ট ভিসা এর প্রয়োজন পড়বে। কানাডা এমন একটি দেশ যে দেশটিতে উচ্চশিক্ষার নিতে যাওয়ার জন্য আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসার নামে কোন ভিসা দেওয়া হবে না। তবে স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, এটা স্টুডেন্ট ভিসার প্রতিচ্ছবি। এই স্টাডি পারমিট মূলত আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করছেন মেয়াদের ওপর নির্ভর করে। স্যার যদি আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করছেন মেয়াদ চার বছর হয় সেক্ষেত্রে আপনার স্টাডি পারমিট এর মেয়াদ চার বছর হবে। সাথে অতিরিক্ত ৯০ দিন যাওয়া হবে।


আপনার স্টাডি সেশন নির্ভর করে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবজেক্ট এর ওপর। তাই আপনার স্টাডি প্রোগ্রাম যদি ছয় মাস কিংবা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য হয় সে ক্ষেত্রে আপনাকে কোন ধরনের স্টাডি পারমিট নিতে হবে না। তবে এর চেয়ে বেশি হলে অবশ্যই সে দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে আপনাকে স্টাডি পারমিট নিতে হবে। যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্য কানাডা থেকে থাকেন সেক্ষেত্রেও আপনাকে স্টাডি পারমিট নিতে হবে না। এছাড়াও একইভাবে আপনার কিংবা আপনার পরিবারের যেকোনো সদস্য যদি রেজিস্টার্ড ইন্ডিয়ান স্ট্যাটাস থেকে থাকে সেক্ষেত্রেও কানাডায় উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টাডি পারমিট নিতে হবে না।


স্টাডি পারমিটের আবেদন এর নিয়ম

আপনি যদি অনলাইন এর মাধ্যমে স্টাডি পারমিট এর আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে,কানাডায় স্টাডি পারমিটের জন্য সর্বপ্রথম সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন কানাডার (CIC) ওয়েব অনলাইনে আবেদন করতে হবে।


অথবা , আপনি যদি চান অফলাইন আবেদন করতে ,তাহলে আপনার নিকটস্থ কানাডিয়ান এম্ব্যাসিতে যোগাযোগ এর মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।


স্টাডি পারমিট এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

কানাডায় স্টাডি ভিসা আবেদন এর জন্য আপনার কিছু ডকুমেন্ট উপস্থাপন করতে হবে তা নিম্নে দেওয়া হলো -


কানাডার স্টাডি পার্মিটের জন্য সর্বপ্রথম সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন কানাডার (CIC) ওয়েবে অনলাইনে আবেদন করুন। অথবা, নিকটস্থ কানাডিয়ান এম্বাসিতে যোগাযোগ করে অফলাইনে আবেদন করুন।  আবেদনের জন্য আপনাকে যা যা সংযুক্ত করতে হবে; কানাডার সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার, কানাডায় থাকাকালীন আপনার থাকা, খাওয়া ও পড়ার খরচ বহন করার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে, তার প্রমাণপত্র, আপনি কোনো প্রকার সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডে যুক্ত নেই তার প্রমাণপত্র, আপনি পুরোপুরি সুস্থ তার প্রমাণ হিসেবে মেডিকেল রিপোর্ট, কানাডায় থাকাকালীন আপনি কোনো প্রকার সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডে যুক্ত হবেন না, তার অঙ্গীকারনামা।


তবে এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি কানাডায় বসবাস করতে পারবেন না। কানাডায় ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।


আপনার খরচ চালানোর আর্থিক যোগান এর প্রমাণ পত্র

কানাডায় থাকাকালীন আপনার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে তার প্রমাণপত্র হিসেবে যা যা যুক্ত করতে হবে -


কানাডার ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ব্যাংক ড্রাফট, এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।  যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি, আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।


স্টাডি পারমিট আবেদন এর খরচ

এই স্টাডি পারমিট ভিসা আবেদন এর জন্য আপনার খরচ পড়বে ১৫০ কানাডিয়ান ডলার যা বাংলা তাকাতে ৮৬১০টাকা।এই টাকা পরিষদ এর মাধ্যমে আপনার কানাডায় স্টাডি এর জন্য স্টাডি পারমিট আবেদন কমপ্লিট হবে ।এর পর আপনাকে ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার থেকে বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন অর্থাৎ -


ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তুলতে হবে।এই কাজ গুলো করতে আপনার খরচ পড়বে ১৪০০০ থেকে ১৭০০০ টাকার মতো।


স্টাডি পারমিট আবেদন এর পর আপনার করনীয় কি?

আপনার স্টাডি পারমিট আবেদন এর ৩০ দিনের মধ্যে চিঠী অথবা আপনার মোবাইল ফোনের নম্বরে মেসেজ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে - আপনার বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন এর প্রিয়জন পড়বে কিনা।


যদি আপনার বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন এর প্রিয়জন পরে সেক্ষেত্রে ওপরের দেওয়া নির্দেশনার মাধ্যমে আপনার ইনফরমেশন টি পাঠাইতে হবে।


যদি তারা আপনার আবেদন ফর্ম গ্রহণ করেন, তবে তারা আপনাকে একটি কনফার্মেশন লেটার পাঠাবেন। এই কনফার্মেশন লেটার কানাডা পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন অফিসে দেখাতে হবে। আর যদি তারা আপনার আবেদন ফর্ম গ্রহণ না করেন, তবে তারা আপনাকে এর কারণ জানিয়ে মেইল পাঠাবেন।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

পাসপোর্টের কপি। 

• শিক্ষার্থীদের ফোন নম্বর দ্বারা ইমেল। 

• পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

• মেডিকেল সার্টিফিকেট। 

• ডিজিটাল ছবি। 

• জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অনলাইন জন্মসনদ।

• পাঠক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমের সনদ।

• সমস্ত একাডেমিক কাগজপত্র (ট্রান্সক্রিপ্ট + সার্টিফিকেট)। 

• রেফারেন্স লেটার।

• স্টেট্মেন অফ পারপাস । 

• কাভার লেটার।

• সিভি।

• ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ (IELTS, 

Duoilingo, TOEFL ইত্যাদি)

• ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং সচ্ছলতা । 

• ট্রেড লাইসেন্স। 

• TIN সার্টিফিকেট। 

• ট্যাক্স রিটার্ন। 

• ভিজিটিং কার্ড। 

• পিতামাতার ছবি (পুরানো এবং নতুন)। 

• পিতামাতার পাসপোর্ট বা এনআইডি। 

• জমি, সম্পত্তি বা সম্পত্তির নথি। 

• সম্পদের মূল্যায়ন এবং সম্পত্তির নথি।


কানাডার উল্লেখযোগ্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম

কানাডার উল্লেখযোগ্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর নাম নিচে দেওয়া হল-

  • টর্নেডো বিশ্ববিদ্যালয়; 

  • ম্যানিতোবা বিশ্ববিদ্যালয়; 

  • অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়; 

  • ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়া; 

  • দ্যা ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু;

  • সাকসেচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়।

দালাল বা প্রতারক হতে সাবধান

আপনি দেশের বাইরে অন্য যেকোনো দেশে পড়াশোনা চিকিৎসা জীবিকা নির্বাহের কারণে বা অন্যান্য যে কোন কাজে যখন একটি দেশ থেকে অপর একটি দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিবেন এবং ভিসা করতে যাবেন সেক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন প্রকার প্রতারক এবং দালালের সাথে সাক্ষাৎ হতে পারে। তারা প্রতিনিয়ত প্রস্তুত থাকে মানুষকে ঠকিয়ে নিজে উপার্জনের জন্য। তাই সাবধানতার সাথে আপনার ভিসাটি প্রস্তুত করুন। এবং আপনার ভ্রমণ টি সুন্দর হোক।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রবাসী বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url