জার্মানিতে কাজের বেতন কত ২০২৪। জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি?

বিশ্বের সকল উন্নত দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি একটি। জার্মানি বিশ্বের সকল শিল্প উন্নত দেশের মধ্যে একটি অন্যতম দেশ। এছাড়াও পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক দিক থেকে জার্মানির অবস্থান চতুর্থ। যারা জার্মানিতে কাজের জন্য বা চাকরির জন্য প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে জার্মানির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। তারা অবশ্যই তাদের কাজের জন্য এই দেশকে বেছে নেওয়ার আগে এই দেশে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এবং কোন কাজে ভালো মানের বেতন দেওয়া হয় সেসব বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিয়ে তারপরেই এই দেশের ভিসা প্রস্তুত করে থাকে।

জার্মানিতে কাজের বেতন কত

আপনি যেই দেশে কাজের জন্য যেতে চান না কেন সেই দেশেরই কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এবং কোন কাজের ওপর ভালো মানের বেতন দেওয়া হয় সে বিষয়টি খুবই ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা কেমন আর কোন কাজের জন্য কেমন বেতন দেওয়া হয়। একজন প্রবাসী হিসেবে কোন কাজটি আপনার জন্য উত্তম হবে আপনি নিম্নের বর্ণনা থেকে জেনে নিতে পারবেন।

জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি?

আপনি যদি শ্রমিক হিসেবে জার্মানিতে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনি যেই সেক্টরের কাজকে বেছে নেন না কেন অবশ্যই আপনাকে  সেই সেক্টরে দক্ষ হতে হবে। জার্মানিতে সকল সেক্টরের কাজের জন্যই চাহিদা রয়েছে তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে দক্ষ শ্রমিকের। তাদের চাহিদার শিষ্যের কিছু কাজ গুলো নিম্ন রূপ-

  • ইলেকট্রিশিয়ান; 

  • মেকানিক্যাল; 

  • আইটি ডিপার্টমেন্ট;

  • ফুড ডেলিভারি ম্যান; 

  • ড্রাইভিং; 

  • হোটেল রেস্টুরেন্টে জব; 

  • শপিং মল; 

  • বিক্রয় কর্মী; 

  • নিরাপত্তা কর্মী; 

  • ক্লিনার; ইত্যাদি।


উপরোক্ত কাজগুলোর জন্য জার্মানিতে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি যদি জার্মানিতে শ্রমিক হিসেবে যেতে চান সেক্ষেত্রে ওপরের কাজগুলোর মধ্যে যেকোনো একটিতে আপনার দক্ষ হতে হবে। তাহলে সেই দেশে গিয়ে আপনি আপনার দক্ষতার সাথে কাজ করে আপনার চাহিদা মতো উপার্জন করতে পারবেন।

এখন আপনি যদি জার্মানিতে কাজের ভিসা নিয়ে প্রবাসী হিসেবে সে দেশে গিয়ে উপার্জন করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই উপরুক্ত কাজগুলোর যেকোনো একটি সম্পর্কে আপনার উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে নিতে হবে। কারণ আপনি যদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন দক্ষ কর্মী হতে পারে তবেই আপনি সেই দেশে গিয়ে আপনার চাহিদা মতো অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।

জার্মানির শীর্ষ চাহিদার পেশা ২০২৪

পেশা 

বার্ষিক বেতন (ইউর)

প্রকৌশল

€ 58,380

তথ্য প্রযুক্তি

€ 43,396

পরিবহন

€ 35,652

ফাইন্যান্স

€ 34,339

বিক্রয় ও বিপণন

€ 33,703

শিশু যত্ন ও শিক্ষা

€ 33,325

নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ

€ 30,598

আইনগত

€ 28,877

শিল্প

€ 26,625

একাউন্টিং এন্ড প্রশাসন

€ 6,498 2

শিপিং এবং উত্পাদন

€ 24,463

খাদ্য সেবা

€ 24,279

খুচরা ও গ্রাহক সেবা

€ 23,916

স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক পরিষেবা

€ 23,569

হোটেল শিল্প

€ 21,513


কাজের জন্য আপনি কেন জার্মানিকে বেছে নিবেন?

যেখানে আপনি চাইলেই বিশ্বের যে কোন দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য যেতে পারেন সেখানে আপনি কেন জার্মানির মতো দেশটিকে আপনার কাজের জন্য বেছে নিবেন। অবশ্যই এ প্রশ্নটি আপনার মনে আসবে। এদেশে অবশ্যই অন্যান্য দেশে থেকে কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলে প্রতিবছর অধিকাংশ বাংলাদেশী কাজের জন্য জার্মানির উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছে। 


•জার্মানিতে প্রতি সপ্তাহে সর্বনিম্ন ৪৮ ঘন্টা কাজ করতে হয় । 

•জার্মানিতে কর্মী অথবা শ্রমিকদের প্রতি বছরে ২৫ থেকে ৪০ দিন বেতনের ছুটি পেয়ে থাকে।

•আপনি চাইলেই অস্ট্রেলিয়া থেকে যেকোনো সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। 

•উচ্চগড় বার্ষিক বেতন €64,000 থেকে € 81,000 এরমধ্যে। 

•এছাড়াও এইখানে আপনি পাবেন উচ্চ কর্মজীবন ভারসাম্য সহ সামাজিক নিরাপত্তা।


কিভাবে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাবেন?


বর্তমান সময়ে একটি দেশ থেকে আরও একটি দেশে যাওয়া খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে। ঠিক সেই ভাবেই বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যাওয়াও অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বহু শ্রমিক স্টুডেন্ট বিভিন্ন কাজে মানুষ জার্মানির উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছে। এখন আপনি যদি চান বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে আপনিও যেতে পারবেন। তবে একটি দেশ থেকে আরেকটি দেশে যেতে অবশ্যই কিছু নিয়ম বিধি নিষেধ রয়েছে। সেগুলো অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করতে হবে। এরপরে ভিসা প্রস্তুত তার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যেতে পারবেন।


তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যদি জার্মানিতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে বৈধ ভিসার মাধ্যমে জার্মানিতে প্রবেশ করতে হবে। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন হতে পারে ভিসা তো আমরা সকলেই চিনি তবে বৈধ ভিসা কোনটিকে বোঝানো হয়েছে। বৈধ ভিসা বলতে বোঝানো হয়েছে আপনারা সকল কাগজ পাতি বৈধতার সাথে এবং সত্যতার সাথে সকল প্রমাণ সঠিকভাবে উপস্থাপন করে আপনার ভিসা তৈরি করতে হবে। বেআইনিভাবে কোন প্রকার অপকর্মের সাথে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আপনি যে কোন কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যেতে পারেন। তবে আপনার কাজের উপর ভিত্তি করে আপনার ভিসা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। নিম্নে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ভিসা গুলোর তথ্য দেওয়া হল:-

স্টুডেন্ট ভিসা
আপনি যদি পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসাটি হবে স্টুডেন্ট ভিসা। এই ভিসাটি পাওয়া খুবই সহজ। আপনি অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিটের পর জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টাডি ভিসার আবেদন করতে পারেন।

আবার আপনি স্টুডেন্ট হিসেবে যদি জার্মানিতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জন্য পার্ট টাইম জবেরও ব্যবস্থা করে নেওয়া যাবে এবং তা অনেক বড় একটি সুবিধা হয়ে থাকবে।

টুরিস্ট ভিসা
আপনি যদি জার্মানিতে ভ্রমণের জন্য যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার টুরিস্ট ভিসা এর জন্য আবেদন করতে হবে।

ওয়ার্কার ভিসা
যারা শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য জার্মানিতে যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রস্তুত করতে হবে। তবে জার্মানিতে কাজের ভিসা পাওয়া খুব একটা সহজ নয়, কিন্তু আপনার দক্ষতা, যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই আপনি শ্রমিক হিসেবে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন।

তবে একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আপনি যেই কাজের জন্যই যান না কেন আপনাকে ইংরেজি এবং জার্মানি ভাষার ওপর দক্ষ হতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে জার্মানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে কত টাকা খরচ পড়বে?

আপনার খরচ নির্ধারণ হয়ে থাকবে আপনি কি কাজের জন্য এবং কোন ভিসা নিয়ে জার্মানিতে যেতে চাইছেন।

আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে জার্মানিতে শ্রমিক হিসেবে যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ হয়ে থাকবে 10 থেকে 12 লক্ষ টাকা।

আবার আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন স্টাডি ভিসা নিয়ে সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ৫ লাখ টাকার মত।

এছাড়াও ভ্রমণের জন্য আপনি যদি জার্মানিতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে টুরিস্ট ভিসা এর খরচ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে ৪ লাখ টাকার মত।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রস্তুত করার নিয়ম

জার্মানিতে কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা ভিসার জন্য আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি রয়েছে৷

1: আপনি যে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা করেছেন তার সাথে প্রাসঙ্গিক প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয়তাগুলি পরীক্ষা করুন। আপনি যে কাজের ভিসা নির্বাচন করতে পারেন তা হল যোগ্য যোগ্য পেশাদারদের জন্য কাজের ভিসা, আইটি বিশেষজ্ঞদের জন্য ভিসা এবং ইইউ ব্লু কার্ড।

2: একজন অনুমোদিত জার্মান নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আপনার জার্মানিতে চাকরির অফার থাকতে হবে। এটি একটি কংক্রিট কাজের প্রস্তাব হতে হবে।

3: আপনার কাছে যে চাকরির প্রস্তাব রয়েছে তা অবশ্যই আপনার শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত হতে হবে। জার্মান কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির প্রয়োজন এমন বাধ্যতামূলক নয়, আপনি এমনকি কিছু বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও নিতে পারেন।

4: নিয়োগকর্তা অবশ্যই জার্মানিতে থাকতে হবে।

5: আপনি যে কাজের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক সেই চাকরির যোগ্যতা যাচাই করতে হবে।

6: সবকিছু যাচাই করার পর, সঠিক ভিসা নির্বাচন করুন এবং ভিসার আবেদন জমা দিতে হবে।

7: প্রদত্ত নির্দেশাবলী অনুযায়ী সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে হবে।

8: ভিসা ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার পর ইন্টারভিউতে অংশ নিতে হবে।

9: একটি জার্মান কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করতে হবে।

10: ইন্টারভিউ দেওয়ার পরে, প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রবাসী বাংলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url